কোনো কারণ ছাড়াই তোমাকে আরোও কিছুকাল মনে রাখবো আমি, যেভাবে শৈশবে সুঁতা ছিঁড়ে নিখোঁজ হওয়া শখের ঘুড়িটাকে মনে রেখেছি এযাবৎকাল।
তোমায় মনে রাখতে গিয়ে দৈনন্দিন রুটিন বদলে ফেলবো তা নয়। সকালে অফিস, দুপুরে চা,স্বাভাবিক মানুষের মতোনই যাপন করবো জীবন।
তোমায় মনে রাখবো মানে এই নয় যে তোমার দেওয়া দুঃখ ভুলে যাব। শেঁকড় ছাড়া কি আর বৃক্ষকে কল্পনা করা সম্ভব?
ছোট্টো বেলায় রেললাইন হতে কুঁড়িয়ে পাওয়া বেড়ালটা মা রা যাবার পরে যে দুঃখটা হয়েছিল, তোমার দুঃখগুলোকে রাখবো সেই দুঃখের পাশে। মাঝে মাঝে রাত্তিরে হাতড়ে হাতড়ে নেড়েচেড়ে দেখবো সেগুলো। খুব বেশি দুঃখ হলে ছুটে যাবো রবীন্দ্রনাথের গানের কাছে, তবে তুমি যাহা চাও, তাই যেনো পাও, আমি যত দুঃখ পাই গো..
তোমার শহরে যাবো ব্যাবসায়িক কাজে, অথবা তোমার সুবাধে পরিচিত হওয়া কোন বন্ধুর শেষ সময়কালে। হতে পারে কারণ ছাড়াই যাব।
চায়ের কাপ আর সিগারেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকবো মুদি দেকানের পাশে। তোমাকে দেখা যাবে হয়তো পাশাপাশি রিকশায় চেপে বসে হয়ে উঠেছো কারোর প্রথম প্রেমিকা।
আমি তোমায় পাইনি বলে অন্যকেউ তোমায় পাবে না তা তো নয়। প্রকৃতি অমন যে, একপাশ ভেঙেচুরে নিয়ে অন্যপাশ ভরাট করে দারুণ মমতা নিয়ে, এটাই নিয়ম।
ফুলের দোকানের দিকে আমি ফিরেও তাকাবো না আর, তোমার পছন্দের কবিতার বই খুঁজতে ঢুকবো লাইব্রেরিতে। সন্ধ্যা গড়িয়ে এলো একটা মন ভাঙা কবিতার বই নিয়ে আমি হাঁটা দিবো। শহরের এইটুকুন বাতাসও তোমায় সে সংবাদ দিবে না, কেউ না। তুমিও জানবে না।
তোমাকে কোনোরকম কারণ ছাড়াই আরোও কিছুকাল মনে রাখবো আমি; এরকম তোমায় মনে রেখে হাঁটতে হাঁটতে বহুকাল পার হবার পর আমি গিয়ে থামবো এক ভোরে পৃথিবীর ওপাশে।
প্রিয় মায়াবতী,
ততক্ষণে তুমি শুধু জানবে, কাউকে মনে রেখে পুরো পৃথিবী হেঁটে আসা যায়, হাঁটতে হাঁটতে চলে যাওয়া যায় মৃ ত্যু র কাছেও, তবুও নিজের কাছে ফেরা যায় না আর কখনোও..