আমি চেয়েছিলাম তুমি হও হুমায়ূন আহমেদের কোনো এক উপন্যাসের সহজ সরল নায়িকার মতো প্রাণবন্ত।
কোন কোন ঘুম না আসা রাত্রিরে তুমি ওপাশ থেকে ফোন করে গান ধরো, যদি মন কাঁদে তুমি ফিরে এসো, ফিরে এসো এক বর্ষায়।
ফাইভস্টার রেস্তোরার দামি ম্যানুর কফির স্বাদ না খুঁজে মাঝেমধ্যে ওই শ্যাতশ্যাতে হোটেলের সিঙ্গারর গাল ভাঙার আবদার করো। খাওয়া শেষে খুব শক্ত করে হাত চেপে ধরে রিকশায় চড়ে শহর দেখতে দেখতে হয়ে ওঠো চমৎকার প্ৰেমিকা
বৃষ্টি হলে শাড়ি চুড়ি পরে চোখে গাঢ় করে কাজল দিয়ে সাজুগুজু করো। চিঠিতে লিখে রাখো বৃষ্টি নামার আনন্দের সংবাদ, চিঠির খামে ভরে রাখো কয়েকফোঁটা বৃষ্টি।
জন্মদিন এলে ওসব চিঠি কুরিয়ার করে পাঠাও সঙ্গে পাঠাও গুনে গুনে বেশ কয়েকটি কদমফুল।
অথচ, তুমি নিজেকে জড়ালে ওয়েস্টার্ন পোশাকে। আমার প্রাণবন্ত স্নিগ্ধ প্রেমিকা না হয়ে বুকের অন্দরের গোপন ফিতা দেখিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়ে উঠলে নষ্টালজিক এক নারী। নাপিত থেকে মুচি তোমার বুকের সাইজ মেপে তোমাকে প্রশংসায় ভাসায়, ডুবায়, চুবায়।
আমি খুঁজি প্রেম, তুমি যৌনতা। আমি চাই একটু তোমার কাঁধে মাথা রাখতে, তুমি চাও কামনার আগুনে জ্বলেপুড়ে আঙ্গার হতে। আমার এই সব চাওয়াকে তুমি খেইত্যা বলে উপাধি দাও। তুমি মেনে নাও পৃথিবীর যাবতীয় অশ্লীলতা, অথচ আমাকে বলো লম্পট।
আমি বোধহয় সেইসব খেইত্যা মানুষদের দলে ভিড়েছি যাদের এখনও কবিতা পড়লে হৃদয় শূন্য হয়ে আসে, জোছনা দেখলে হতে চায় গৃহত্যাগী, বৃষ্টি দেখলে বিড়াল ছানার মতো প্রিয়তমার বুকে ঢুকে বসে থাকতে চায় চুপচাপ
আমি বোধহয় সেই-সব খেইত্যা প্রেমিকদের দলের মানুষ যারা শুধু প্রেমিকার প্রেমটুকুই চিনেছে, প্রেমিকার শরীর ছোঁয়ার প্রয়োজন মনে করেনি।
তুমি হয়তো জানো না, শরীর যদি আমায় টানতো তবে আমি পৃথিবীর এক'শো তিরানব্বইটি দেশের নারীর নগ্ন শরীরের দিকে ছুটতাম, তোমাকে কেন্দ্র করে ঘুরতাম না।