বিচ্ছেদের চার-৪ বছর

 


আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে চার বছর, তবে সম্পর্ক নষ্ট হয়নি।

বিচ্ছেদ মন ভাঙ্গে, দুরত্ব ও বাড়ে তবে ভালোবাসা নষ্ট হয় না।

আমাদের সম্পর্কের বয়স চার বছরের মত, অনেক সুন্দর ছিল পরিচয়টা। পরিচয় হয় ফেসবুকে। রিকোয়েস্ট দেয়া, এক্সেপ্ট করা, সব মিলিয়ে একটা কাকতালীয় ময়। আমি তার প্রেমে পড়েছিলাম তার সামনের দুটো দাঁত দেখে। তাকে সেদিন বলে ফেললাম " আপনাকে কি আমাকে দিবেন? আমি তো আপনার ইদুরের দাঁতের প্রেমে পরে গিয়েছি" আপর পাশের জন মানে উনি হাসচ্ছেন, পরে উনি কেমন জানিনা ভয়ে ভয়ে বলে ফেললেন, হুম দিলাম। তবে একটা শর্ত্য আছে, আমি রিলেশনে যাব টিক তবে আমি পরিবারের কথার বাইরে যেতে পারব না। আমিও বলে উটলাম সমস্যা নেই, একসময় সব টিক হয়ে যাবে। এইভাবে আমাদের সম্পর্কটা শুরু হয়। আমাদের প্রথম দেখা হয় ফেনিতে। তাদের বাড়িতে। সে আমার জন্য নিজ হাতে যত্ন করে বানানো পিঠা নিয়ে আসে। আমরা এক দিঘির পাড়ে বসে সে আমাকে নিজের হাতে পিঠা গুলো খায়ে দেয়। ফেনি যাওয়া দুইটা কারন ছিল, ১. তার সাথে দেখা, আর ২. তালের রস আনার জন্য। সে আমি খেতে পচ্ছন্দ করি বলে আমার জন্য তালের রস নিয়ে রেখেছে তাও আবার তার বন্ধুকে বলে। সেদিন দেখা করে চলে আসলাম আমি চট্টগ্রামে। সে চট্টগ্রামের মহিলা পলিটেকনিকেলে লেখা পড়া করত।  যায় হোক এমন করে আমাদের সম্পর্কটা খুব ভালোই যাচ্ছিলো। অনেক সুন্দর ছিলো আমাদের সম্পর্কটা, অনেক মানে অনেক। হটাৎ একদিন এলো মহামারী পরিস্থিতি। তার মা জানতে পারে আমাদের সম্পর্কের কথা, আর তার মার কথা তাকে তাদের পছন্দে বিয়ে দিবে, আর চট্টগ্রামের পোলারে বিয়ে দিবে না। তাকে অনেক বকা-জকা করলো তাকে। তবে আমাদের সম্পর্কটা টিক আগের মতো চলতে লাগলো। তার মামা বড় ডাক্তার। তাদের পরিবারের সবাই উনাকে মানে, উনার কথা বা উনার মতামত শেষ মতামত। তাকে তাদের মাঝে একদিন এমনও প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছে যে, তার মার মাথায় হাত রেখে প্রতিজ্ঞা করেন যে আমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখবে না, আর কোন যোগাযোগ ও না। তখন আমাদের সম্পর্কে একটু চাপ আসে। কিছুদিন কথা বলা বন্ধ ছিল। তবে আমরা তো একজন আরেকজন কে ছারার না। আমাদের আবার কথা বা সেই আগের মত চলছে। সে তখন আবার চট্টগ্রাম চলে আসে তার লেখাপড়ার কারনে, এমন করে করে আমাদের তিন বছর কেটে যায়। এইখানে একটা কথা না বললেই নই, আমাদের যতবার বাইরে দেখা হতো ততবার আমাদের খাবার বিল সে পরিশোধ করতো। কেন না আমার তখন আমার মনে ভালোবাসা থাকলেও পকেটে চিলো না টাকা। চাকরি করতাম সত্য, তবে পরিবারের দায়িত্ব ছিলো অনেক মাথায়, আর সে-ও আমাকে বিল দিতে দিতোনা, কেন না আমার পকেটে টাকা থাকলেও কখন কোথায় খরচ করি বা কোথায় টাকা যায় খুজে পাইনা, তার তখন বকা শুনতে হতো আমার। তার শাসন গুলো খুব উপভোগ করতাম। হঠাৎ করে একদিন সে আমাকে বলে উটলো, সে আমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে পারবে না, পরিবারে অনেক সমস্যা হচ্ছে, তখন আমি আমাতে নেই, সে বলে উটলো, আপর পাশে থেকে কাদো কাদো কন্ঠে বলে উটলো "আমাদের কথা হতে পারে একজন ভালো বন্ধু হয়ে" আমি ও কান্না চোখে বলে ফেললাম আমাদের তো বিচ্ছেদ হচ্ছেনা, আমরা তো আমাদের মাঝেই থাকবো, হইতো দুজন দুই স্থানে। এইভাবে আমাদের চলতে থাকে, তার ডিপ্লোমা করা শেষ, সে তখন চলে যায় ঢাকা, তার দাদার বাসায়, তার দাদা ঢাকা কোন এক ব্যবসায় করে। এইভাবে চলতে থাকে আরো দের বছর, এইবার তার বিয়ের জন্য ছেলে খুজচ্ছে, পেয়েও গেল একজনকে, ছেলেটা নাকি আমাদের সব কথা জানতে, সে বললো। ছেলের সাথে আমার কথা হয়নি এখনো তবে তার কথা শুনে বা দেখে বুঝলাম ছেলেটা অনেক ভালো, ছেলে কোন এক বড় কোম্পানিতে ইন্জিনিয়ার এর চাকরি করে। এমন করে সময় যায় আর তার বিয়ের সময় আসতে আসতে এগিয়ে আসছে, তার বিয়ের চারদিন আগেও কথা হচ্ছে আমাদের, তার চোখে জল, সে আমি কষ্ট পাবো বলে আমার সামনে থেকে লুকিয়ে গেল। তবে আমি তো তার ভাষা বুঝি, আমিও তাকে বঝতে দেয়নি যে আমি দেখেছি, আমি তখন জানি আমার মাঝে কি হচ্ছে, তখন বিড়ির কালো ধোঁয়া পুড়াচ্চিলাম আমি। আর মেসেজে তাকে বললাম, তোমার চোখে জল মানায় না, আমাদের সম্পর্কটা তো এমন না যে আমাদের যোগাযোগ থাকবে না, আমরাই হইতো দুজন যে আমাদের ভালোবাসা বন্ধুত্তের মধ্যেই রয়ে গিয়েছে। জানা আছে, সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর কত কিছুইনা হয়ে থাকে, তবে আমাদের তা-না। আমাদের সম্পর্কটাকে আমি বেস্ট মনে করি। সে হয়তো অনন্যের ঘরে ভালো থাকবে, আমিও কিছু সময় পর বিয়ে করে অন্য আর একজনকে নিয়ে সংসার করব, তবে আমাদের যোগাযোগ থাকবে, এমন ভালো ক'জন বা বাসতে পারে। "পহেলা মে" তার বিবাহ হলো। 

এখনো অনেক ভালোবাসি থাকে, আমার জীবনে হয়তো  অন্য কেউ আসবে, তবে আমি জানি আমরা যতদিন বেঁচে থাকব আমাদের ভালোবাসা বা বন্ধুত্ত্ব সারাজীবন রয়ে যাবে। 

আমরাই হয়তো এমন, যে বিচ্ছেদের পরও আমাদের প্রথমের মত বন্ধুত্ত্ব আছে। 

সব ভালোবাসা পূর্ণ্যতা পাইনা, আর সব পূর্ণ্যতা ভালোবাসা হয়না।

ভালোবাসলে পেতে হবে তার কোন মানে হয়না, ভালোবাসা তাকে মুক্তি দিতে হয়, তবে সে এখন অন্য কারো, হয়তো আগের মত এখন আর কথা হবে না, তবুও তার সাথে কথা বলার খিদেটা আমার রয়ে যাবে আজীবন।  

ঈশ্বরের কাছে প্রাথনা করি সব সময় হাসি খুশিতে থাকো, আর সুন্দর থাকো।😊

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post