কাউকে না পাবার চেয়ে শতগুণ বেশি যন্ত্রণার হলো, জীবনে কাউকে পেয়েও হারিয়ে ফেলাটা।
ত্রিশ বছরের পুরোনো প্রতিবেশী কেউ মারা গেলে আমরা যতটা কষ্ট পাই, তার চেয়ে শতগুণ বেশি কষ্ট পাই তিন মাস ধরে ঘরে পালা বেড়ালটা হঠাৎ মরে গেলে। মায়া জিনিসটাই ভীষণ মারাত্মক! রোজ সকালে নেট অন করেই টুং করে যে মানুষটির টেক্সট পেতে অভ্যস্ত আমরা, সে মানুষটি কারণে বা অকারণে হুট করে একদিন সকালে টেক্সট না করলে মনটা কীরকম বিষণ্ণতায় ভরে যায়। মানুষ আসলে মানুষের অভাবে মরে না, মানুষ মরে স্মৃতির জ্বালায়, মায়ার আগুনে পুড়ে পুড়ে। যে কখনও ছিলই না, তার জন্য কখনও মায়াই জন্মায় না। মায়া জন্মায় তার জন্য, যে জীবনের চারপাশে বৃত্তের মতো হয়ে একসময় ঘুরেছিল। যে আজও আসেইনি, তার চলে যাবার প্রশ্নই আসে না। যে এখন জীবনজুড়ে আছে, তার চলে যাবার প্রশ্ন থাকে, তাকে হারিয়ে ফেলার ভয় থাকে। সত্যিটা হচ্ছে, যে যাকে যত গভীরভাবে ভালোবাসে, সে তাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে তত বেশি ভোগে। এই ভয়টা একা হয়ে যাবার ভয়, স্মৃতির দড়িতে ফাঁস লেগে প্রতিদিনই এক বার করে ঠায় মরে যাবার ভয়। এ ভয় ভীষণ রকমের তীব্র এক ভয়। এর একটাই কারণ: মানুষ যতটা আত্মনির্ভরশীল, তার শতগুণ বেশি মায়ানির্ভরশীল।